আল্লাহর রাসূলের সমীপে আবু সুফিয়ানমাররুজ জাহারানে অবতরণের পর হযরত আব্বাস রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাদা খচ্চরের পিঠে আরোহণ করে ঘোরাফেরা করতে বেরোলেন। তিনি চাচ্ছিলেন যে, কাউকে পেলে মক্কায় খবর পাঠাবেন,আর রাহীতুল মাখতুম, মূল : আল্লামা সফিউর রহমান মোবারকপুরী,...
এরপর পুনরায় তারা সফর করতে শুরু করলেন। রাতের প্রথম প্রহরে তারা মাররুজ জাহারান অর্থাৎ ফাতেমা প্রান্তরে গিয়ে পৌঁছুলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশে সাহাবারা পৃথকভাবে আগুন জ্বালালেন। এতে দশ হাজার চুলায় রান্না হচ্ছিলো। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম...
আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। ‘তিনি দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সূরা ইউসুফ : আয়াত ৯২)। আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস এরপর কয়েক লাইন কবিতা আবৃত্তি করলেন, তার অর্থ হচ্ছে, ‘তোমার বয়সের শপথ, আমি যখন লাতে’র শাহ সওয়ারকে মুহাম্মাদের শাহ সওয়ারের...
হযরত ইউসুফ আ. এর ভাইয়েরা তাকে বলেছিলেন, ‘আল্লহর শপথ, আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই আপনাকে আমাদের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন এবং আমরা নিশ্চয়ই অপরাধী ছিলাম। (সূরা ইউসুফ : আয়াত ৯১)আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস তাই করলেন। এই আয়াত শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম...
হযরত আলী রা. আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস এবং আব্দুল্লাহ ইবনে উমাইয়াকে বললেন, তোমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যাও এবং হযরত ইউসুফকে তার ভাইয়েরা যে কথা বলেছিলেন, সে কথা বলো। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিশ্চয়ই এটা পছন্দ করবেন...
এরা উভয়ে তাকে নানাভাবে কষ্ট দিয়েছিলো এবং কবিতা রচনা করে নিন্দা করে বেড়াতো। এ অবস্থা দেখে হযরত উম্মে সালমা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন, আপনার চাচাতো ভাই ফুফাতো ভাই আপনার কাছে সবচেয়ে খারাপ হবে এটা সমীচীন নয়।আর রাহীতুল...
জাহাফা বা তার আরও কিছু এগিয়ে যাওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা হযরত আব্বাসের সাথে দেখা। তিনি ইসলামগ্রহণ করে সপরিপারে মদীনায় হিজরত করে যাচ্ছিলেন। আবওয়া নামক জায়গায় পৌঁছে তার চাচাতো ভাই আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস এবং ফুফাতো ভাই...
ফলে মুসলমানদের যুদ্ধ প্রস্তুতির খবরই কোরায়শদের কাছে পৌঁছুতে পারে নি। মক্কা অভিমুখে মুসলিম বাহিনীঅষ্টম হিজরীর ১০ই রমযান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা অভিমুখে রওয়ানা হলেন। তার সঙ্গে ছিলেন ১০ হাজার সাহাবা। মদীনার তত্ত¡াবধানের জন্যে আবু রাহাম গেফারীকে নিযুক্ত করা...
হে ওমর রা., তুমি কি করে জানবে, এমনও হতে পারে যে, আল্লাহ তায়ালা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এসে বলবেন, তোমরা যা ইচ্ছা করো, আমি তোমাদের মাফ করে দিয়েছি। একথা শুনে হযরত ওমরের রা. দু’চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠলো। তিনি বললেন, আল্লাহ...
সেসব আত্মীয়-স্বজন তাদের পরিবার পরিজনের হেফাজত করবেন। হযরত ওরম রা. হযরত হাতেবের কথা শুনে বললেন, হে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনি অনুমতি দিন, আমি তার শিরচ্ছেদ করবো। এই লোকটি আল্লাহ তায়ালা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খোয়নত করেছে।...
বর্তমানে আমার পরিবার পরিজন তাদের কাছে রয়েছে। কোরায়শদের সাথে আমার কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই, যে কারণে তারা আমার পরিবার পরিজনের তত্ত¡বধান করবে। তাই আমি চিন্তা করলাম যে, তাদের একটা উপকার করবো এর ফলে তারা আমার পরিবার পরিজনের হেফাজত করবে। আমি...
আল্লাহর কসম, আল্লাহ তায়ারা এবং তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর আমার ঈমান রয়েছে। আমি মুরদাত হয়ে যাইনি বা আমার মধ্যে কোনো পরিবর্তনও আসেনি। কথা হচ্ছে যে, আমি কোরায়শ বংশের লোক নই। আমি তাদের মধ্যে আত্মগোপন করেছিলাম। আর রাহীতুল...
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চিঠিখানা পড়িয়ে দেখলেন যে, ওতে লেখা রয়েছে, ‘হাতেব ইবনে আবু আলতাআর পক্ষ থেকে কোরায়শদের প্রতি।’ এতে কোরায়শদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কা অভিযানের খবর দেওয়া হয়েছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাস করলেন, হাতেব...
এরপর হযরত আলী রা. বললেন, আমি আল্লাহর নামে কসম করে বলছি, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও মিথ্যা বলেননি, আমরাও মিথ্যা বলছি না। তুমি হয়তো চিঠি দাও, না হয় আমরা তোমাকে উলঙ্গ করবো। একথা শুনে মহিলা বললো, আচ্ছা আপনারা একটু ঘুরে...
সেখানে উটের পিঠে আরোহনকারিনী একজন মহিলাকে পাবে। তার কাছে একখানি চিঠি পাবে। সেই চিঠি কোরাশদের কাছে পাঠানো হয়েছে। চারজন সাহাবী রওযা খাখ-এ পৌঁছে সেই মহিলাকে পেলেন। মহিলাকে জিজ্ঞাসা করা হলো তোমার কাছে কি কোনো চিঠি আছে? মহিলা অস্বীকার করলো। সাহাবারা...
এদিকে হাতেব ইবনে আবু আলতাআ কোরায়শদরে এক খানি চিঠি লিখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কা অভিযানের কথা জানানোর চেষ্টা করেন। সেই চিঠি মক্কায় কোরায়শদের হাতে পৌঁছানোর জন্যে অর্থের বিনিময়ে একজন মহিলাকে নিয়োগ করেন। সেই মহিলা খোঁপার ভেতর চিটিখানি লুকিয়ে...
এই ক্ষুদ্র সেনাদল প্রেরণের উদ্দেশ্য ছিলো এই যে, যারা বোঝার তারা বুঝবে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উল্লিখিত জায়গায় যাবেন। চারিদিকে এই খবরই ছড়িয়ে পড়বে। এ ক্ষুদ্র সেনাদল উল্লিখিত জায়গায় পৌঁছার পর খবর পেলো যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া...
আমরা যেন মক্কাবাসীদের কাছাকাছি যাওয়ার আগে তারা বুঝতে না পারে, জানতেও না পারে। গোপনীয়তা রক্ষার জন্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অষ্টম হিজরীর রমজান মাযে হযরত আবু কাতাদা ইবনে রাবঈর নেতৃত্বে আটজন সাহাবীকে এক ছারিয়্যায় বাতনে আযাম নামক জায়গায় প্রেরণ...
এতে শ্রোতারা বুঝতে পারলেন যে, কোরায়শরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এরপর বুদাইল এলেন। এরপর এলো আবু সুফিয়ান। এর ফলে সাহাবারা পরিস্থিতি উপলব্ধি করলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের বললেন, মক্কায় যেতে হবে। সাথে সাথে এ দোয়া করলেন যে, হে আল্লাহ...
আবু সুফিয়ান বললো, আল্লাহর শপথ, এছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। মক্কা অভিযানের প্রস্তুতি তিবরানির বর্ণনা থেকে জানা যায়, কোরায়শদের বিশ্বাসঘাতকতার খবর আসার তিনদিন আগেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আয়েশা রা. কে তার সাজ সরঞ্জাম প্রস্তুত করতে বলেছিলেন।...
জানি না সেটা কল্যাণকর হবে কি না। লোকেরা জানতে চাইল সেটা কি? আবু সুফিয়ান বললেন, আলী পরামর্শ দিলেন আমি নিরাপত্তার কথা ঘোষণা করি, অবশেষে আমি তাই করলাম। কোরায়শরা বললো, মোহাম্মাদ কি তোমার নিরাপত্তার ঘোষণাকে কার্যকর বলে ঘোষণা করেছে? আবু সুফিয়ান...
কোরায়শদের কাছে গেলে তারা তাকে ঘিরে ধরে এবং মদীনার খবর জানতে চাইল। আবু সুফিয়ান বললেন, কথা বলেছি কিন্তু তিনি কোনো জবাব দেননি। আবু কোহাফার পুত্রের কাছে গেছি তার মধ্যে ভালো কিছু পাইনি। ওমর ইবনে খাত্তাবের কাছে গেছি, তাকে মনে হয়েছে...
সকল চেষ্টার ব্যর্থতার পর আবু সুফিয়ানের দু’চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে গেলো। তিনি সংশয় দোলায়িত চিত্তে কম্পিত কণ্ঠে হযরত আলী রা. কে বললো, আবুল হাসান আমি লক্ষ্য করছি যে, বিষয়টা জটিল হয়ে পড়েছে। কাজেই আমাকে একটা উপায় বলে দাও। হযরত...
সে লোকদের মধ্যে আশ্রয়দানের ঘোষণা দিয়ে সব সময়ের জন্য আরবদের সর্দার হবে? হযরত ফাতেমা রা. বললেন, আল্লাহর শপথ, আমার সন্তান লোকদের মধ্যে নেতা হওয়ার মতো ঘোষণা দেওয়ার যোগ্য হয়নি। তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপস্থিতিতে কেউ আশ্রয় দিতে পারে...